মিখাইল গর্বাচেভ

গর্বাচেভ প্রিভোলনোয়ে, স্তাভরোপোল ক্রাই, রাশিয়ান এবং ইউক্রেনীয় বংশোদ্ভুত একটি দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। জোসেফ স্ট্যালিন এর শাসনামলে তিনি বেড়ে ওঠেন। তার যৌবনে তিনি কম্বাইন হারভেস্টার সোভিয়েত ইউনিয়নের কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদানের আগে সমষ্টিগত কৃষিখামার পরিচালনা করেছিলেন।
মস্কো স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অবস্থা ১৯৫৩ সালে তিনি তাঁর সহপাঠী, রাইসা তিত্রেঙ্কোকে বিয়ে করেন। ১৯৫৫ সালে তিনি আইন বিষয়ে ডিগ্রি লাভ করেন। স্ট্যালিনের মৃত্যুর পর, সোভিয়েত নেতা নিকিতা ক্রুশ্চেভ এর ডি-স্ট্যালিনাইজেশন সংস্কারের একজন প্রবক্তা হিসাবে আবির্ভূত হন। তিনি ১৯৭০ সালে স্ট্যাভ্রোপোল আঞ্চলিক কমিটির প্রথম পার্টি সেক্রেটারি নিযুক্ত হন। এ সময়ে তিনি স্ট্যাভ্রোপোল খাল নির্মাণের তত্ত্বাবধান করেন।
সোভিয়েত নেতা লিওনিদ ব্রেজনেভ এবং ইউরি অ্যান্ড্রোপোভ এবং কনস্টান্টিন চেরনেঙ্কো এর সংক্ষিপ্ত মেয়াদের পরে ১৯৮৫ সালে পলিটব্যুরো গর্বাচেভকে সাধারণ সম্পাদক হিসাবে নির্বাচিত করে। যদিও গর্ভাচেভ সোভিয়েত রাষ্ট্র এবং সমাজতান্ত্রিক আদর্শ সংরক্ষণের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন তথাপি গর্বাচেভ বিশ্বাস করতেন যে সেদেশে উল্লেখযোগ্য সংস্কার প্রয়োজন, বিশেষ করে ১৯৮৬ সালে চেরনোবিল বিপর্যয় এর পর সেটা আরো প্রকট হয়। তিনি আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত সেনা প্রত্যাহার করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি রোনাল্ড রিগ্যান এর সাথে পারমাণবিক অস্ত্র সীমাবদ্ধ করার জন্য এবং শীতল যুদ্ধ সমাপ্ত করার জন্য শীর্ষ সম্মেলন শুরু করেন। রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে তিনি গ্লাসনোস্ট বা "উন্মুক্ততা" নীতি বাক স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে অনুমতি দেন। তার "পেরেস্ত্রোইকা" বা "পুনর্গঠন" নীতি দক্ষতা আনায়নের নিমিত্ত অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিকেন্দ্রীকরণের চেষ্টা করেন। তাঁর গণতন্ত্রীকরণের পদক্ষেপ এবং জনগনের ভোটে নির্বাচিত পিপলস ডেপুটিদের নিয়ে কংগ্রেস গঠন একদলীয় রাষ্ট্রকে দুর্বল করে দেয়। ১৯৮৯-১৯৯০ সালে ইস্টার্ন ব্লকের বিভিন্ন দেশ মার্কসবাদী-লেনিনবাদী শাসন ত্যাগ করলে গর্বাচেভ সেসব দেশে সামরিক হস্তক্ষেপ করতে অস্বীকৃতি জানান। অভ্যন্তরীণভাবে, ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদী চেতনা সোভিয়েত ইউনিয়নকে ভেঙে ফেলার হুমকি দিতে শুরু করে। মার্কসবাদী-লেনিনবাদী কট্টরপন্থীরা ১৯৯১ সালে গর্বাচেভের বিরুদ্ধে আগস্ট অভ্যুত্থান ঘটায়। অভ্যুত্থান সফল না হলেও, পরবর্তিতে সোভিয়েত ইউনিয়ন গর্বাচেভের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ভেঙে যায়। সোভিয়েত রাষ্ট্রপতিপদ থেকে পদত্যাগ করার পর, তিনি গর্বাচেভ ফাউন্ডেশন চালু করেন, রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি বরিস ইয়েলৎসিন এবং ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর সমালোচক হয়ে ওঠেন এবং রাশিয়ার সামাজিক-গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পক্ষে প্রচারণা করেন। দীর্ঘ অসুস্থতার পর ২০২২ সালে গর্বাচেভ মারা যান। উইকিপিডিয়া দ্বারা উপলব্ধ